Consensus Algorithm এবং তার প্রকারভেদ

Latest Technologies - ব্লকচেইন (Blockchain) - NCTB BOOK

Consensus Algorithm কী?

Consensus Algorithm হলো একটি প্রক্রিয়া যা ব্লকচেইন বা ডিসেন্ট্রালাইজড নেটওয়ার্কে সমস্ত নোড (কেন্দ্র বা অংশগ্রহণকারী) একমত হয়ে ব্লকচেইনে ডেটা বা লেনদেনের বৈধতা নিশ্চিত করে। এই অ্যালগরিদমের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের সকল অংশগ্রহণকারী একমত হয়ে একটি অভিন্ন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে। ব্লকচেইনে লেনদেনের সঠিকতা এবং নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য কনসেনসাস অ্যালগরিদম অপরিহার্য।

কনসেনসাস অ্যালগরিদমের প্রয়োজনীয়তা

  • নিরাপত্তা নিশ্চিত করা: নেটওয়ার্কে প্রতারণা বা আক্রমণ প্রতিরোধ করে লেনদেন সঠিকভাবে যাচাই করে।
  • বিকেন্দ্রীকরণ বজায় রাখা: সমস্ত নোড সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং কোনো কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ ছাড়াই সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
  • ডেটার ইমিউটেবিলিটি নিশ্চিত করা: কনসেনসাসের মাধ্যমে একবার ডেটা ব্লকচেইনে যুক্ত হলে, তা পরিবর্তন করা অসম্ভব হয়।
  • দ্রুত ও কার্যকর লেনদেন: নেটওয়ার্কে লেনদেন দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

কনসেনসাস অ্যালগরিদমের প্রকারভেদ

ব্লকচেইনে ব্যবহৃত কনসেনসাস অ্যালগরিদমের বেশ কয়েকটি প্রকার রয়েছে। প্রতিটি প্রকারের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য এবং ব্যবহারের ক্ষেত্র ভিন্ন। নিচে কনসেনসাস অ্যালগরিদমের কিছু প্রধান প্রকার এবং তাদের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:

১. প্রুফ অব ওয়ার্ক (Proof of Work - PoW)

  • বর্ণনা: PoW হলো ব্লকচেইনের প্রাথমিক কনসেনসাস অ্যালগরিদম, যা বিটকয়েন এবং অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ব্যবহৃত হয়। এখানে মাইনাররা একটি জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করে এবং ব্লক খুঁজে বের করে।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • মাইনাররা কম্পিউটার ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট হ্যাশ পাওয়ার চেষ্টা করে, যা ব্লকের বৈধতা নিশ্চিত করে।
    • যে মাইনার প্রথমে সমস্যার সমাধান করে, সে ব্লকটি ব্লকচেইনে যুক্ত করার অনুমতি পায় এবং পুরস্কার পায়।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • উচ্চ নিরাপত্তা, কিন্তু বিদ্যুৎ খরচ বেশি।
    • স্কেলেবিলিটি সমস্যা থাকতে পারে।
  • ব্যবহার: বিটকয়েন, লাইটকয়েন, এবং অন্যান্য প্রাথমিক ক্রিপ্টোকারেন্সি।

২. প্রুফ অব স্টেক (Proof of Stake - PoS)

  • বর্ণনা: PoS হলো একটি শক্তি সাশ্রয়ী কনসেনসাস অ্যালগরিদম, যা PoW এর বিকল্প হিসেবে এসেছে। এখানে মাইনারদের বদলে ভ্যালিডেটররা ব্লক তৈরি করে, যারা তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি স্টেক করে।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • ভ্যালিডেটরদের নির্বাচন করা হয় তাদের স্টেকের পরিমাণের ভিত্তিতে। যে বেশি স্টেক করে, তার ব্লক যোগ করার সম্ভাবনা বেশি।
    • যদি ভ্যালিডেটর ব্লকটি সঠিকভাবে যাচাই করতে পারে, তবে সে পুরস্কার পায়।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • কম বিদ্যুৎ খরচ এবং দ্রুত লেনদেন।
    • কেন্দ্রীকরণের ঝুঁকি থাকতে পারে, কারণ যারা বেশি স্টেক করে তারা বেশি ক্ষমতা পায়।
  • ব্যবহার: ইথেরিয়াম ২.০, কার্ডানো, পোলকাডট।

৩. ডেলিগেটেড প্রুফ অব স্টেক (Delegated Proof of Stake - DPoS)

  • বর্ণনা: DPoS হলো PoS এর একটি উন্নত সংস্করণ, যেখানে নেটওয়ার্কের ব্যবহারকারীরা ভ্যালিডেটরদের ভোট দেয়। নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রতিনিধিদের ব্লক যাচাই এবং যোগ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • ব্যবহারকারীরা তাদের স্টেক ব্যবহার করে প্রতিনিধিদের ভোট দেয়। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ব্লক ভেরিফাই করে এবং ব্লকচেইনে যুক্ত করে।
    • প্রতিনিধিরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করলে, ব্যবহারকারীরা তাদের সরিয়ে অন্য কাউকে নির্বাচন করতে পারে।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • উচ্চ স্কেলেবিলিটি এবং দ্রুত লেনদেন।
    • কেন্দ্রীকরণ এবং প্রতিনিধিদের ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে।
  • ব্যবহার: EOS, Tron, Steem।

৪. প্রুফ অব অথরিটি (Proof of Authority - PoA)

  • বর্ণনা: PoA হলো একটি অনুমতিভিত্তিক কনসেনসাস অ্যালগরিদম, যেখানে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের (অথরিটি) ব্লক যাচাই এবং যুক্ত করার দায়িত্ব থাকে। এটি সাধারণত প্রাইভেট বা কনসোর্টিয়াম ব্লকচেইনে ব্যবহৃত হয়।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • নির্দিষ্ট সংখ্যক অথরিটি ব্লক তৈরি এবং ভেরিফাই করে। তারা পূর্বনির্ধারিত হয় এবং নেটওয়ার্কের ওপর তাদের নির্দিষ্ট ক্ষমতা থাকে।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • খুব দ্রুত এবং কম বিদ্যুৎ খরচ।
    • সম্পূর্ণ কেন্দ্রীকরণ, যা বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে।
  • ব্যবহার: VeChain, xDai।

৫. প্রুফ অব বার্ন (Proof of Burn - PoB)

  • বর্ণনা: PoB হলো একটি কনসেনসাস মেকানিজম যেখানে মাইনারদের নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি পুড়িয়ে দিতে হয় (Burn) ব্লক খুঁজে পাওয়ার সুযোগ পেতে।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • মাইনাররা তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি পাঠিয়ে দেয় একটি "Burn" ঠিকানায়, যা পরবর্তীতে আর পুনরুদ্ধার করা যায় না।
    • যে মাইনার বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি পুড়িয়ে দেয়, তার ব্লক তৈরি করার সম্ভাবনা বেশি।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, কারণ মাইনারদের ক্রিপ্টোকারেন্সি খরচ করতে হয়, বিদ্যুৎ নয়।
    • বিনিয়োগকারীদের জন্য লাভজনক হতে পারে, কিন্তু এটি সম্পদের অপচয় হতে পারে।
  • ব্যবহার: Slimcoin, Counterparty।

৬. হাইব্রিড কনসেনসাস (Hybrid Consensus)

  • বর্ণনা: কিছু ব্লকচেইন PoW এবং PoS এর সংমিশ্রণ ব্যবহার করে হাইব্রিড কনসেনসাস মডেল তৈরি করেছে, যা উভয়ের সুবিধা নিয়ে আসে।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • PoW মাইনাররা ব্লক তৈরি করে, এবং PoS ভ্যালিডেটররা সেই ব্লকগুলো যাচাই করে।
    • এটি নিরাপত্তা এবং শক্তি সাশ্রয়ের মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রাখে।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • উচ্চ নিরাপত্তা এবং কম বিদ্যুৎ খরচ।
    • পরিচালনা কিছুটা জটিল হতে পারে।
  • ব্যবহার: Decred।
Content added By

Proof of Work (PoW) এবং এর কাজ

Proof of Work (PoW) হলো ব্লকচেইন প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত একটি কনসেনসাস অ্যালগরিদম, যা ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে সমস্ত লেনদেন যাচাই এবং ব্লক তৈরি করতে মাইনারদের একটি প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করে। এটি ব্লকচেইন নেটওয়ার্ককে নিরাপদ এবং বিকেন্দ্রীকৃত রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

PoW সর্বপ্রথম বিটকয়েন ব্লকচেইনে ব্যবহৃত হয়েছিল, এবং এটি ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিংয়ের জন্য সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি। মাইনাররা একটি জটিল গাণিতিক সমস্যা সমাধান করে এবং সফল হলে ব্লকচেইনে একটি ব্লক যুক্ত করে।

Proof of Work (PoW) কীভাবে কাজ করে?

PoW একটি প্রক্রিয়া যেখানে মাইনাররা গাণিতিক সমস্যার সমাধান করে নেটওয়ার্কে ব্লক যুক্ত করে এবং পুরস্কার অর্জন করে। PoW কাজ করার পদ্ধতিটি নিচে ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করা হলো:

ধাপ ১: লেনদেন সংগ্রহ এবং ব্লক তৈরি

  • নেটওয়ার্কে প্রতিনিয়ত নতুন লেনদেন ঘটে এবং এই লেনদেনগুলো মাইনারদের কাছে পৌঁছে।
  • মাইনাররা এই লেনদেনগুলো একটি ব্লকে গুছিয়ে রাখে এবং ব্লকটির জন্য একটি নির্দিষ্ট হ্যাশ ভ্যালু খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।

ধাপ ২: হ্যাশিং এবং নন্স ব্যবহার

  • মাইনিং প্রক্রিয়ায় মাইনাররা ব্লকের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে একটি নির্দিষ্ট হ্যাশ ভ্যালু বের করার চেষ্টা করে, যা ব্লকের তথ্যের সাথে মেলে। এই হ্যাশ বের করার জন্য মাইনাররা SHA-256 নামক একটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক হ্যাশ ফাংশন ব্যবহার করে।
  • হ্যাশ ফাংশনের সাহায্যে মাইনাররা একটি নন্স (Nonce) ব্যবহার করে বারবার ব্লকের তথ্য পরিবর্তন করে যতক্ষণ না একটি বৈধ হ্যাশ পাওয়া যায় যা ব্লকচেইনের নিয়ম অনুযায়ী সঠিক।

ধাপ ৩: বৈধ হ্যাশ খুঁজে পাওয়া

  • PoW পদ্ধতিতে, বৈধ হ্যাশ পাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক শূন্য (Leading Zeros) দিয়ে শুরু হওয়া হ্যাশ ভ্যালু প্রয়োজন হয়। মাইনাররা নন্স পরিবর্তন করে ক্রমাগত হ্যাশিং করতে থাকে যতক্ষণ না তারা এই বৈধ হ্যাশ খুঁজে পায়।
  • যে মাইনার প্রথমে বৈধ হ্যাশ খুঁজে পায়, সেই মাইনার ব্লকটি ব্লকচেইনে যুক্ত করার অনুমতি পায় এবং সে পুরস্কার পায়।

ধাপ ৪: ব্লক যাচাই এবং ব্লকচেইনে যোগ করা

  • যখন একটি মাইনার বৈধ হ্যাশ খুঁজে পায়, তখন এটি ব্লকটি নেটওয়ার্কে সম্প্রচার করে।
  • নেটওয়ার্কের অন্যান্য নোড এবং মাইনাররা ব্লকটি যাচাই করে নিশ্চিত করে যে এটি সঠিক এবং বৈধ। যদি ব্লকটি বৈধ হয়, তবে সেটি ব্লকচেইনে যুক্ত করা হয়।

ধাপ ৫: মাইনারদের পুরস্কার প্রদান

  • মাইনার সফলভাবে ব্লক খুঁজে পাওয়ার পর, সে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি (যেমন: বিটকয়েন) পুরস্কার হিসেবে পায়।
  • ব্লক পুরস্কার ছাড়াও মাইনাররা ব্লকে যুক্ত করা লেনদেনের ফি পায়।

Proof of Work (PoW) এর বৈশিষ্ট্য

উচ্চ নিরাপত্তা:

  • PoW নেটওয়ার্ককে সুরক্ষিত রাখে, কারণ গাণিতিক সমস্যাগুলো সমাধান করা অত্যন্ত শক্তিশালী কম্পিউটেশনাল ক্ষমতা প্রয়োজন হয়। এতে আক্রমণকারীদের নেটওয়ার্কে প্রবেশ করা কঠিন হয়।

বিকেন্দ্রীকরণ (Decentralization):

  • PoW ব্লকচেইন সম্পূর্ণ বিকেন্দ্রীকৃত করে, যেখানে মাইনাররা স্বাধীনভাবে নেটওয়ার্কে কাজ করে এবং নতুন ব্লক যুক্ত করে।

ইমিউটেবিলিটি (Immutability):

  • একবার একটি ব্লক ব্লকচেইনে যুক্ত হলে, এটি পরিবর্তন করা অত্যন্ত কঠিন, কারণ একটি ব্লক পরিবর্তন করলে তার পরবর্তী সকল ব্লকের হ্যাশ পরিবর্তন করতে হবে, যা প্রায় অসম্ভব।

মাইনারদের প্রতিযোগিতা:

  • মাইনাররা একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করে ব্লক খুঁজে বের করে, যা নেটওয়ার্ককে সক্রিয় এবং সুরক্ষিত রাখে।

Proof of Work (PoW) এর সুবিধা

  1. নিরাপত্তা: PoW এর মাধ্যমে ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক অত্যন্ত নিরাপদ থাকে, কারণ প্রতিটি ব্লক খুঁজে পাওয়া এবং লেনদেন যাচাই করার জন্য প্রচুর কম্পিউটেশনের প্রয়োজন হয়।
  2. বিশ্বাসযোগ্যতা: PoW-এর মাধ্যমে ব্লকচেইনে সংযুক্ত প্রতিটি ব্লক বৈধ এবং সঠিক, কারণ এটি যাচাই করার জন্য নেটওয়ার্কের প্রতিটি নোড সম্মতি জানায়।
  3. বিকেন্দ্রীকরণ: কোনো কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ছাড়াই নেটওয়ার্ক পরিচালিত হয়, যা ব্লকচেইনকে স্বাধীন এবং বিশ্বস্ত করে তোলে।

Proof of Work (PoW) এর অসুবিধা

  1. বিদ্যুৎ খরচ: PoW ভিত্তিক ব্লকচেইনে মাইনিং করার জন্য প্রচুর শক্তি খরচ হয়, যা পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
  2. স্কেলেবিলিটি সমস্যা: PoW নেটওয়ার্কে লেনদেনের গতি তুলনামূলকভাবে ধীর হতে পারে, কারণ প্রতিটি ব্লক খুঁজে বের করতে অনেক সময় লাগে।
  3. বড় মাইনারদের প্রাধান্য: যারা শক্তিশালী মাইনিং রিগ ব্যবহার করতে পারে, তাদের ব্লক খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি, যা কেন্দ্রীকরণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
Content added By

Proof of Stake (PoS) এবং Delegated Proof of Stake (DPoS)

Proof of Stake (PoS) এবং Delegated Proof of Stake (DPoS) উভয়ই ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের কনসেনসাস অ্যালগরিদম যা ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের সুরক্ষা এবং লেনদেন যাচাই নিশ্চিত করে। যদিও উভয় অ্যালগরিদম শক্তি সাশ্রয়ী এবং বিকেন্দ্রীকৃত নেটওয়ার্কের উন্নত সংস্করণ হিসেবে পরিচিত, তবুও তাদের কাজের ধরণ এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে।

Proof of Stake (PoS)

PoS কী?

Proof of Stake (PoS) হলো একটি কনসেনসাস মেকানিজম যা প্রুফ অব ওয়ার্ক (PoW)-এর বিকল্প হিসেবে এসেছে। এখানে ব্লক তৈরি এবং লেনদেন যাচাই করার জন্য মাইনারদের বদলে ভ্যালিডেটর (Validator) নির্বাচন করা হয়, যারা তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি স্টেক (Stake) করে। ভ্যালিডেটররা তাদের স্টেকের ভিত্তিতে ব্লক তৈরির সুযোগ পায়, এবং সফল হলে তারা পুরস্কৃত হয়।

PoS কীভাবে কাজ করে?

স্টেকিং প্রক্রিয়া:

  • PoS ভিত্তিক ব্লকচেইনে, অংশগ্রহণকারীরা তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ স্টেক করে।
  • যে অংশগ্রহণকারী বা ভ্যালিডেটর বেশি পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি স্টেক করে, তার ব্লক তৈরির সম্ভাবনা বেশি।

ভ্যালিডেটর নির্বাচন:

  • ব্লক তৈরি করার জন্য সিস্টেম এলোমেলোভাবে একটি ভ্যালিডেটর নির্বাচন করে, তবে স্টেকের পরিমাণ এবং ভ্যালিডেটরের কার্যক্রমের উপর ভিত্তি করে এটি নির্ধারিত হয়।
  • নির্বাচিত ভ্যালিডেটর ব্লকটি যাচাই করে এবং নেটওয়ার্কে যুক্ত করে। যদি ভ্যালিডেটর সঠিকভাবে কাজ করে, তবে সে পুরস্কৃত হয়।

শাস্তি ব্যবস্থা:

  • PoS সিস্টেমে ভ্যালিডেটররা যদি অসততা বা প্রতারণার চেষ্টা করে, তবে তাদের স্টেক করা ক্রিপ্টোকারেন্সি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে কেটে নেওয়া যেতে পারে, যাকে Slashing বলা হয়।

PoS-এর সুবিধা এবং অসুবিধা

সুবিধা:

  • শক্তি সাশ্রয়ী: PoS বিদ্যুৎ খরচ কমায়, কারণ এটি PoW-এর মতো গাণিতিক সমস্যার সমাধান প্রয়োজন হয় না।
  • স্কেলেবিলিটি: PoS ভিত্তিক ব্লকচেইনে লেনদেন দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব, যা স্কেলেবিলিটি বাড়ায়।
  • সুরক্ষা: ভ্যালিডেটরদের স্টেক করা ক্রিপ্টোকারেন্সি তাদের সিস্টেমের প্রতি আস্থাশীল রাখে এবং প্রতারণা প্রতিরোধ করে।

অসুবিধা:

  • কেন্দ্রীকরণের ঝুঁকি: যাদের কাছে বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি থাকে, তাদেরই ব্লক তৈরির সম্ভাবনা বেশি, যা কেন্দ্রীকরণের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
  • স্টেকিং বাধা: ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় স্টেক করা কঠিন হতে পারে, যা তাদের অংশগ্রহণ কমিয়ে দেয়।

উদাহরণ

  • ইথেরিয়াম ২.০, কার্ডানো, পোলকাডট প্রভৃতি ব্লকচেইন প্ল্যাটফর্মে PoS অ্যালগরিদম ব্যবহৃত হয়।

Delegated Proof of Stake (DPoS)

DPoS কী?

Delegated Proof of Stake (DPoS) হলো PoS এর একটি উন্নত সংস্করণ, যেখানে নেটওয়ার্কের অংশগ্রহণকারীরা তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি স্টেক করে এবং প্রতিনিধিদের (Delegates) নির্বাচন করে যারা ব্লক তৈরি ও যাচাই করার কাজ করে। DPoS আরো বেশি দক্ষ এবং শক্তি সাশ্রয়ী কনসেনসাস মেকানিজম, যা PoS এর চেয়েও বেশি স্কেলেবল।

DPoS কীভাবে কাজ করে?

  • প্রতিনিধি নির্বাচন:
    • নেটওয়ার্কের ব্যবহারকারীরা তাদের স্টেক ব্যবহার করে ভোট দেয় এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রতিনিধিদের নির্বাচন করে।
    • এই প্রতিনিধিরা ব্লক তৈরি এবং যাচাই করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়। যারা বেশি ভোট পায় তারাই প্রতিনিধিত্ব করে।
  • ব্লক যাচাই এবং তৈরি:
    • নির্বাচিত প্রতিনিধিরা পালাক্রমে ব্লক তৈরি করে এবং লেনদেন যাচাই করে। এটি ব্লক তৈরির প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে এবং স্কেলেবিলিটি বাড়ায়।
  • ভোটিং এবং প্রতিনিধিদের দায়িত্ব:
    • যদি কোনো প্রতিনিধি অসৎ হয় বা তার দায়িত্ব পালন না করে, তবে ব্যবহারকারীরা তাকে সরিয়ে অন্য কাউকে নির্বাচন করতে পারে। এটি সিস্টেমের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়।
  • পুরস্কার:
    • সফলভাবে ব্লক তৈরি এবং যাচাই করার পর প্রতিনিধিরা পুরস্কার পায় এবং তারা সেই পুরস্কারের একটি অংশ ব্যবহারকারীদের সাথে শেয়ার করতে পারে যারা তাদের ভোট দিয়েছে।

DPoS-এর সুবিধা এবং অসুবিধা

সুবিধা:

  • উচ্চ স্কেলেবিলিটি: DPoS সিস্টেমে লেনদেন দ্রুত সম্পন্ন হয় এবং ব্লক তৈরি দ্রুত হয়, যা এটিকে একটি স্কেলেবল সিস্টেম করে তোলে।
  • ভোটিং প্রক্রিয়া: ব্যবহারকারীরা তাদের স্টেকের মাধ্যমে প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করে এবং অকার্যকর প্রতিনিধিদের সরানোর ক্ষমতা পায়।
  • কম শক্তি খরচ: DPoS PoW এবং PoS এর তুলনায় শক্তি সাশ্রয়ী এবং বিদ্যুৎ খরচ কম।

অসুবিধা:

  • কেন্দ্রীকরণের ঝুঁকি: DPoS প্রতিনিধিদের কেন্দ্রীকরণ ঘটাতে পারে, কারণ যারা বেশি ভোট পায় তাদেরই ক্ষমতা বেশি থাকে।
  • ক্ষমতার অপব্যবহার: নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যদি সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন না করে, তবে নেটওয়ার্কে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

উদাহরণ

  • EOS, Tron, এবং Steem হলো কিছু জনপ্রিয় ব্লকচেইন প্ল্যাটফর্ম, যা DPoS ভিত্তিক কনসেনসাস মেকানিজম ব্যবহার করে।
Content added By

Practical Byzantine Fault Tolerance (PBFT) হলো একটি কনসেনসাস অ্যালগরিদম যা ব্লকচেইন এবং অন্যান্য ডিসেন্ট্রালাইজড সিস্টেমে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য কনসেনসাস প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত হয়। এটি ঐতিহ্যবাহী Byzantine Fault Tolerance (BFT) এর একটি উন্নত সংস্করণ, যা বাস্তব পরিস্থিতিতে ব্যবহার উপযোগী করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। PBFT বিশেষভাবে ব্যবসা এবং এন্টারপ্রাইজ লেভেলের ব্লকচেইন অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে ব্যবহৃত হয় যেখানে সুরক্ষা, নির্ভরযোগ্যতা এবং স্কেলেবিলিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

PBFT কী?

PBFT এমন একটি কনসেনসাস মেকানিজম যা একটি নেটওয়ার্কে উপস্থিত নোডগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে সক্ষম করে, এমনকি যদি কিছু নোড ম্যালিসিয়াস বা ব্যর্থ হয়। এটি একটি বিকেন্দ্রীকৃত নেটওয়ার্কে Byzantine Faults (যেখানে কিছু নোড অসৎ বা অনির্ভরযোগ্য আচরণ করে) প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। PBFT সিস্টেমে, যতক্ষণ পর্যন্ত নেটওয়ার্কের ৩-ফ ভাগ (⅔) অংশ সৎ থাকে, ততক্ষণ সিস্টেমটি নিরাপদ এবং কার্যকরীভাবে কাজ করতে পারে।

PBFT কীভাবে কাজ করে?

PBFT কনসেনসাস প্রক্রিয়াটি কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় এবং এতে তিনটি প্রধান ধাপ থাকে:

প্রিপ্রিপেয়ার (Pre-Prepare) ধাপ:

  • প্রাথমিকভাবে, একটি প্রাইমারি নোড (Primary Node) বা লিডার লেনদেনগুলো সংগ্রহ করে এবং একটি নতুন ব্লক প্রস্তাব করে। এই প্রাইমারি নোড অন্যান্য নোডগুলোর কাছে প্রিপ্রিপেয়ার মেসেজ পাঠায়।
  • প্রাইমারি নোডটি এই প্রস্তাবটি অনুমোদন করার জন্য নেটওয়ার্কের অন্য নোডগুলোর মতামত চায়।

প্রিপেয়ার (Prepare) ধাপ:

  • নেটওয়ার্কের অন্যান্য নোডগুলি (যেগুলোকে রেপ্লিকা নোড বলা হয়) প্রাইমারি নোড থেকে প্রিপ্রিপেয়ার মেসেজ পাওয়ার পর, তারা সেই প্রস্তাব যাচাই করে এবং যদি এটি সঠিক মনে হয়, তবে তারা প্রিপেয়ার মেসেজ পাঠায়।
  • এই ধাপের মাধ্যমে নোডগুলো একে অপরের সাথে সমন্বয় করে এবং প্রস্তাবিত ব্লকটি বৈধ হলে সেটি মেনে নেয়।

কমিট (Commit) ধাপ:

  • যদি নেটওয়ার্কের নোডগুলো প্রিপেয়ার ধাপের সময় সম্মত হয় এবং ৩-ফ ভাগ (⅔) অংশ এটি গ্রহণ করে, তাহলে নোডগুলো কমিট মেসেজ পাঠায়।
  • যখন নোডগুলো পর্যাপ্ত সংখ্যক কমিট মেসেজ পায়, তখন তারা ব্লকটি চূড়ান্তভাবে ব্লকচেইনে যুক্ত করে এবং লেনদেনটি সম্পন্ন করে।

এই তিনটি ধাপের মাধ্যমে PBFT নেটওয়ার্কের নোডগুলো সম্মত হয় এবং ব্লক চেইনে যুক্ত করা হয়। এই ধাপগুলোর মাধ্যমে PBFT নিশ্চিত করে যে নেটওয়ার্কে কিছু নোড ম্যালিসিয়াস হলেও ব্লকচেইন সুরক্ষিত এবং নির্ভুল থাকে।

PBFT-এর বৈশিষ্ট্য

নির্ভরযোগ্যতা এবং নিরাপত্তা:

  • PBFT কনসেনসাস সিস্টেম নেটওয়ার্কে উপস্থিত অনির্ভরযোগ্য বা ম্যালিসিয়াস নোডের কার্যক্রম প্রতিরোধ করতে সক্ষম। যতক্ষণ নোডগুলোর ৩-ফ ভাগ (⅔) সৎ থাকে, ততক্ষণ এটি সিস্টেমকে নিরাপদ রাখতে সক্ষম।

দ্রুত কনসেনসাস:

  • PBFT অন্যান্য কনসেনসাস মেকানিজমের তুলনায় দ্রুত কনসেনসাসে পৌঁছাতে পারে কারণ এটি ব্লক তৈরি এবং যাচাই করার জন্য কম সময় নেয়। এটি ডিসেন্ট্রালাইজড অ্যাপ্লিকেশন এবং এন্টারপ্রাইজ ব্লকচেইনে বিশেষভাবে কার্যকর।

কম শক্তি খরচ:

  • PBFT পদ্ধতি PoW (Proof of Work) এর মতো গাণিতিক সমস্যার সমাধান প্রয়োজন হয় না, তাই এটি শক্তি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব।

বিকেন্দ্রীকরণ বজায় রাখা:

  • যদিও PBFT সিস্টেমে প্রাইমারি নোড বা লিডার থাকে, নেটওয়ার্কের সকল নোডই প্রাইমারি নোড পরিবর্তনের সুযোগ পায়। এতে সিস্টেমের বিকেন্দ্রীকরণ বজায় থাকে এবং নির্দিষ্ট নোডের ওপর নির্ভরতা কমে।

PBFT-এর সুবিধা এবং অসুবিধা

সুবিধা

  • উচ্চ নিরাপত্তা: PBFT ম্যালিসিয়াস নোড এবং ত্রুটি প্রতিরোধে কার্যকর, যা ব্লকচেইনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
  • দ্রুত লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ: PBFT বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং দ্রুত কনসেনসাসে পৌঁছায়, যা ব্লক তৈরি এবং লেনদেন যাচাই দ্রুত করে।
  • শক্তি সাশ্রয়ী: PoW এর মতো গাণিতিক সমস্যার প্রয়োজন হয় না, তাই এটি শক্তি সাশ্রয়ী এবং কম বিদ্যুৎ খরচ করে।

অসুবিধা

  • স্কেলেবিলিটি সীমাবদ্ধতা: PBFT সিস্টেমে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়লে (বিশেষ করে হাজারের বেশি হলে), কনসেনসাস প্রক্রিয়ায় ধীরগতি এবং জটিলতা বাড়তে পারে।
  • কেন্দ্রীকরণের ঝুঁকি: যদিও PBFT বিকেন্দ্রীকৃত, তবে প্রাইমারি নোড বা লিডারের ওপর নির্ভরতা কিছুটা কেন্দ্রীকরণের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।

PBFT-এর ব্যবহার

PBFT সাধারণত প্রাইভেট এবং কনসোর্টিয়াম ব্লকচেইনে ব্যবহৃত হয় যেখানে অনুমতিভিত্তিক (Permissioned) নেটওয়ার্কে নির্দিষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য অংশগ্রহণকারীরা কাজ করে। এর কয়েকটি ব্যবহার ক্ষেত্র:

  • এন্টারপ্রাইজ ব্লকচেইন: IBM Hyperledger Fabric ব্লকচেইন PBFT কনসেনসাস অ্যালগরিদম ব্যবহার করে, যা এন্টারপ্রাইজ অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য সমাধান প্রদান করে।
  • ব্যাংকিং এবং ফাইন্যান্স: PBFT ফাইন্যান্সিয়াল নেটওয়ার্কে নিরাপদ এবং দ্রুত লেনদেন নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত হয়।
  • সরবরাহ শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা (Supply Chain Management): প্রাইভেট ব্লকচেইনে ব্যবহৃত PBFT সিস্টেম সরবরাহ শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনার ডেটা নিরাপদ এবং সঠিক রাখে।
Content added By

নতুন Consensus Algorithms এবং তাদের উন্নয়ন

ব্লকচেইন প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে নতুন নতুন কনসেনসাস অ্যালগরিদম তৈরি হচ্ছে, যেগুলো বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করে আরও উন্নত এবং কার্যকরী নেটওয়ার্ক গঠন করতে সক্ষম। ব্লকচেইনের স্কেলেবিলিটি, নিরাপত্তা, এবং শক্তি সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে এসব নতুন কনসেনসাস অ্যালগরিদম উদ্ভাবিত হয়েছে। নিচে কিছু নতুন কনসেনসাস অ্যালগরিদম এবং তাদের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করা হলো:

১. প্রুফ অব হিস্ট্রি (Proof of History - PoH)

  • বর্ণনা: Proof of History (PoH) হলো একটি নতুন কনসেনসাস অ্যালগরিদম যা Solana ব্লকচেইনে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি টেম্পোরাল (Temporal) প্রুফ সিস্টেম যেখানে সময়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লেনদেনগুলোকে ক্রমানুসারে সাজানো হয়।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • PoH সময়ের একটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক রেকর্ড তৈরি করে, যা প্রতিটি লেনদেনের সময়কে নির্ধারণ করে। এটি একটি ক্রমানুসারে সাজানো গাণিতিক প্রক্রিয়া যা সমস্ত নোডের জন্য একই সময়ের নির্দেশনা প্রদান করে।
    • PoH মাইনারদের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে সহায়ক, কারণ লেনদেনের সময় যাচাই করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সূচি (Timeline) ব্যবহার করা হয়।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • অত্যন্ত স্কেলেবল এবং দ্রুত লেনদেন সম্পন্ন করতে সক্ষম।
    • বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, কারণ গাণিতিক সমস্যা সমাধানের প্রয়োজন নেই।
  • ব্যবহার: Solana ব্লকচেইন।

২. হাইব্রিড প্রুফ অব ওয়ার্ক এবং প্রুফ অব স্টেক (Hybrid PoW/PoS)

  • বর্ণনা: Hybrid PoW/PoS হলো একটি কনসেনসাস মডেল যেখানে Proof of Work (PoW) এবং Proof of Stake (PoS) একত্রিত করা হয়। এটি PoW এর নিরাপত্তা এবং PoS এর শক্তি সাশ্রয়ের সুবিধা নিয়ে আসে।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • PoW মাইনাররা ব্লক তৈরি করে এবং প্রাথমিক যাচাই করে। এরপর PoS ভ্যালিডেটররা সেই ব্লক যাচাই করে এবং চূড়ান্তভাবে ব্লকচেইনে যুক্ত করে।
    • এই মডেল দুটি স্তরের নিরাপত্তা প্রদান করে, কারণ ভ্যালিডেটরদের স্টেক তাদের সিস্টেমের প্রতি আস্থাশীল রাখে।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • দ্বৈত নিরাপত্তা ব্যবস্থা যা ব্লকচেইনকে আরও সুরক্ষিত করে।
    • বিদ্যুৎ খরচ কমানোর পাশাপাশি স্কেলেবিলিটিও বাড়ায়।
  • ব্যবহার: Decred ব্লকচেইন।

৩. প্রুফ অব বার্ন (Proof of Burn - PoB)

  • বর্ণনা: Proof of Burn (PoB) হলো একটি অ্যালগরিদম যেখানে মাইনারদের তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি পুড়িয়ে (Burn) দিতে হয় ব্লক খুঁজে পাওয়ার সুযোগ পেতে। এটি PoW এর মতো বিদ্যুৎ খরচ কমিয়ে আনতে সহায়ক।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • মাইনাররা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি Burn Address-এ পাঠিয়ে দেয়, যা পুনরুদ্ধার করা যায় না।
    • যে মাইনার বেশি পরিমাণ পুড়িয়ে দেয়, তার ব্লক তৈরির সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • শক্তি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব।
    • দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের জন্য লাভজনক হতে পারে।
  • ব্যবহার: Slimcoin এবং কিছু অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি।

৪. প্রুফ অব কপাসিটি (Proof of Capacity - PoC)

  • বর্ণনা: Proof of Capacity (PoC) বা Proof of Space হিসেবে পরিচিত, যেখানে মাইনারদের তাদের হার্ড ড্রাইভের স্টোরেজ ব্যবহার করে ব্লক খুঁজে বের করতে হয়।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • PoC অ্যালগরিদমে, মাইনাররা তাদের হার্ড ড্রাইভে গাণিতিক পাজলগুলো প্রি-জেনারেটেড ফর্মে রাখে। যখন ব্লক খুঁজে পাওয়ার প্রয়োজন হয়, তখন তারা দ্রুত তাদের ড্রাইভ থেকে সঠিক পাজল বের করে।
    • যাদের স্টোরেজ ক্ষমতা বেশি, তাদের ব্লক খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • শক্তি সাশ্রয়ী, কারণ এটি কম বিদ্যুৎ খরচ করে।
    • বড় স্টোরেজ ব্যবহারকারীদের জন্য এটি কার্যকর।
  • ব্যবহার: Burstcoin এবং Chia।

৫. প্রুফ অব ইলাপ্সড টাইম (Proof of Elapsed Time - PoET)

  • বর্ণনা: PoET হলো একটি কনসেনসাস অ্যালগরিদম যা ইন্টেলের SGX (Software Guard Extensions) ব্যবহার করে। এটি মূলত অনুমতিভিত্তিক (Permissioned) ব্লকচেইনে ব্যবহৃত হয়।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • PoET সিস্টেমে নোডগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অপেক্ষা করে, যা এলোমেলোভাবে নির্ধারিত হয়। যে নোডটি প্রথমে সময় পূরণ করে, সেটি ব্লক তৈরি করতে সক্ষম হয়।
    • SGX প্রযুক্তি ব্যবহার করে PoET সময় নির্ধারণের প্রক্রিয়াটি নিরাপদ রাখে।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য।
    • অনুমতিভিত্তিক ব্লকচেইনের জন্য উপযোগী।
  • ব্যবহার: Hyperledger Sawtooth।

৬. ডাইরেক্টেড অ্যাসাইক্লিক গ্রাফ (DAG) এবং টাঙ্গেল (Tangle)

  • বর্ণনা: Directed Acyclic Graph (DAG) হলো একটি ভিন্ন ধরনের ব্লকচেইন কাঠামো, যা ব্লকের পরিবর্তে একটি গ্রাফ ব্যবহার করে লেনদেন সংরক্ষণ করে। IOTA প্ল্যাটফর্মে ব্যবহৃত Tangle হলো DAG-এর একটি উদাহরণ।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • DAG ভিত্তিক সিস্টেমে প্রতিটি লেনদেন পূর্ববর্তী দুটি লেনদেন যাচাই করে। এতে ব্লক তৈরি বা মাইনারদের প্রয়োজন হয় না, বরং নেটওয়ার্কের ব্যবহারকারীরাই লেনদেন যাচাই করে।
    • Tangle সিস্টেমে, প্রতিটি ব্যবহারকারী লেনদেন করতে হলে আগের দুটি লেনদেন যাচাই করতে হয়, যা নেটওয়ার্ককে সক্রিয় রাখে।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • মাইনার ছাড়া লেনদেন প্রক্রিয়া, যা স্কেলেবিলিটি বাড়ায়।
    • বিদ্যুৎ খরচ অত্যন্ত কম।
  • ব্যবহার: IOTA এবং অন্যান্য DAG ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম।

৭. প্রুফ অব রেপুটেশন (Proof of Reputation - PoR)

  • বর্ণনা: Proof of Reputation (PoR) একটি অনুমতিভিত্তিক কনসেনসাস অ্যালগরিদম যা নোডের রেপুটেশনের ওপর ভিত্তি করে কাজ করে।
  • কীভাবে কাজ করে:
    • নেটওয়ার্কে নির্দিষ্ট কিছু নির্ভরযোগ্য নোড ব্লক তৈরি এবং যাচাইয়ের দায়িত্ব পায়। এই নোডগুলোর রেপুটেশন তাদের পূর্ববর্তী পারফরমেন্সের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।
    • যারা দীর্ঘমেয়াদীভাবে সৎ এবং দক্ষভাবে কাজ করেছে, তারা বেশি রেপুটেশন পায় এবং তাদের ব্লক তৈরি করার সুযোগও বেশি।
  • বৈশিষ্ট্য:
    • শক্তি সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক গঠন।
    • অনুমতিভিত্তিক সিস্টেমে দ্রুত লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ।
  • ব্যবহার: VeChain এবং অন্যান্য এন্টারপ্রাইজ ব্লকচেইন প্ল্যাটফর্ম।
Content added By
Promotion